বহুল আলোচিত পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৩ বছর আজ। এবার করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে পালন হচ্ছে দিনটি। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। পার্বত্য শান্তি চুক্তি দিবস উপলক্ষে আগেভাগেই খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে সীমিত কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। খাগড়াছড়ি রিজিয়ন ও পার্বত্য জেলা পরিষদ দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের সংঘাত বন্ধে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারের পক্ষে তখনকার চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লার সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি-জেএসএস এর সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। শান্তিচুক্তির পর থেকে পাহাড়ি এলাকায় শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করে। শুরু হয় কিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও। শান্তিচুক্তির ফলে প্রাথমিকভাবে শান্তি বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। সরকার তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে।
পাহাড়িদের আর্থ-সামাজিক জীবনেও আসতে থাকে ব্যাপক পরিবর্তন। এক সময় তিন পার্বত্য জেলা- রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল করুণ। পাহাড়ের পর্যটন স্পট সাজেক ছিল আতঙ্কিত ও বিচ্ছিন্ন জনপদ। যোগাযোগ ছিল নিষিদ্ধ। চুক্তি সইয়ের পর সেই সাজেক পর্যটন স্পটের সুনাম আজ দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। গড়ে উঠেছে ছোট- বড় হোটেল-রেস্তোঁরা। প্রতিনিয়ত আসছে শত শত পর্যটক। অর্থনৈতিক উন্নয়নও ঘটছে, প্রসারিত হয়েছে বাজার ব্যবস্থা।
কিন্তু বর্তমানে আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংঘাত, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ভূমি অধিকার ইত্যাদি ঘটনায় প্রায়শ:ই উত্তপ্ত হয়ে উঠে পাহাড়ী জনপদ। ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে সবুজ পাহাড়ে প্রাণও গেছে অনেকের। সাধারণ পাহাড়বাসী বলছেন, সংঘাত নয় শান্তি চান তারা। তাদের দাবি, সবুজ পাহাড় হয়ে উঠুক নিশ্চিত আবাসস্থল।